মধ্যবিত্ত্বের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে
‘এ জগতে হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভুরি ভুরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি’। বর্তমান দেশের মধ্যবিত্ত্ব প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতার অংশ বিশেষ আজ বেশি মনে পড়ে।
কাঙালের ধনরাশি শোষণ করে যাদের কোষাগারে বিপুল পরিমাণ ধন জমা আছে তারা আজ ধনী। তাদের কোনো চিন্তা নেই। সুইস ব্যাংকে অগণিত টাকা, স্বর্ণের বার জমা আছে। মধ্যবিত্ত্ব আজ করোনার কবলে পড়ে কাঙালি সেজে বসে আছে। তারা না পারে কারো কাছে চাইতে, না পারে মুখ ফুটে বলতে।
মধ্যবিত্ত্ব অনেক পরিবারই আছে, যারা এখন সংসার চালাতেই পারছে না। দু’কুল সামলানো তাদের দায় হয়ে পড়েছে। চোখে সর্ষেফুল। ভাঙে হৃদয়ের দু’কুল। চোখে অমানিশার অন্ধকার। চারদিকে হাহাকার। নেই কেউ সামলাবার।
পরিবারের কর্তাব্যক্তি কারখানায় চাকুরি করতেন। মাসে আট হাজার বা দশ হাজার টাকা পেতেন। মাস শেষে বেতন পেয়ে সংসারের হাল ধরতেন। মা, বাবা, স্ত্রী, ছেলেমেয়ের ভরণপোষণ চালাতেন, এখন কারখানা বন্ধ। কাজ বন্ধ। বেতন বন্ধ। হায়, তিনি এখন ‘নিধিরাম সর্দার’ হয়ে বসে আছেন।
আর কতকাল, সময় যে শেষ হচ্ছে না। কবে কাটবে এ ঘোর অন্ধকার। হৃদয়ের হাহাকার। মনুষ্যত্বের জট খুলবে কবে?
একদিকে পেটের মধ্যে চামচিকার কামড়ানি, অন্যদিকে ওঁৎ পেতে আছে মৃত্যু। চারদিকে মৃত্যুর মিছিল। তবুও ধীর পদক্ষেপে এগোয়, শীতল চাহনি।
হায়, সময় যে আজ স্থির। কিংকর্তব্যবিমূঢ়। হতাশার চোখ, আশায় বাঁধে বুক। হয়তো সহসাই আসবে আলোর ঝলকানি।
মধ্যবিত্ত্ব সেই আশায় বুক বাঁধে।
লেখক পরিচিতি :
মিজানুর রহমান রানা
সম্পাদক, প্রিয় সময় ও চাঁদপুর রিপোর্ট।