
তারা কী আর ফিরে আসে ধানসিঁড়ির তীরে



শন শন বাতাসের গর্জনে, কুয়াশাচ্ছন এই দীর্ঘ রাতে, শিশির ফোঁটার শব্দে, কেবল তাদের মনে পড়ে, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যাদের হারিয়েছি বীভৎস মহামারির এ বছরে, দুই হাজার একুশে। দুর্লঙ্ঘ পাহাড়, সমুদ্রের সীমানা পেরিয়ে হলেও যদি তাদের দেখা পাওয়া সম্ভব হতো, তবে পরিযায়ী বিপ্লবী হয়ে আমি দেখা করতাম তাদের সাথে, আত্মা দহনের সৌন্দর্য উপলব্ধির স্মৃতিসৌধে। কিন্তু না, তাদের সঙ্গে কখনোই, কোনোভাবেই দেখা করা সম্ভব নয়। যারা চলে যায়, তারা আর ফিরে আসে না ধানসিঁড়ির তীরে। যদিও জীবনানন্দ লিখেছেন, ‘আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে/জলঙ্গীর ঢেউ এ ভেজা বাংলারি সবুজ করুণ ডাঙ্গায়।’ এ বছর যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক একটি প্রদীপ হয়ে আলো ছড়িয়েছেন যারা, বছর শেষে তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি করুণ বিলাপের সুরে, তাদের শৈল্পিক-উৎকর্ষ সম্পর্কে জানি অঞ্জলি ভরা দুঃখে।

রাবেয়া খাতুন
অর্ধ শতাধিক উপন্যাসের রচয়িতা রাবেয়া খাতুন। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক। লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার। জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডের বিচারক, শিশু একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘নতুন কুঁড়ি’র বিচারক। তার জন্ম ১৯৩৫ সালে ২৭ ডিসেম্বর বিক্রমপুরে। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি ৮৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ টি এম শামসুজ্জামান
জনপ্রিয় অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান ছিলেন পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় তার আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মাননা অর্জন করেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানের জন্ম ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: যুগান্তর
E/N


