মার্চ ও এপ্রিলে হবে দেশব্যাপী ইউপি নির্বাচন
ধাপে ধাপে চলছে ভোট গ্রহনের চিন্তা, পাঁচ ইউপিতে ভোট ২০ অক্টোবর। আগামী বছরের মার্চ ও এপ্রিলে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারও দেশব্যাপী ধাপে ধাপে ভোট গ্রহন চিন্তা আছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির। এক্ষেত্রে ভোট গ্রহণের জন্য ৩৫ থেকে ৪০ দিন হাতে রেখেই নির্বাচবের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
প্রথম ধাপের ভোট হতে পারে মার্চের মাঝামাঝি।
দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে মার্চের শেষে এবং এপ্রিলে হবে তৃতীয় ধাপের ভোট ।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। এবার দলীয় প্রতীকে ব্যালট পেপারের পাশাপাশি উপজেলা সদরের ইউপিগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। আইন অনুযায়ী আগামী বছরের ২১ মার্চের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্বাচন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। গতকাল নির্বাচন কমিশন স্থগিত পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রংপুর সদর উপজেলার তিনটি, ভোলার লালমোহনের একটি ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নে ভোট হবে আগামী ২০ অক্টোবর। অক্টোবর জুড়েই স্থগিত বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে পরিষদের মেয়াদের বিষয়ে বলা হয়েছে- “কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, …সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হতে পাঁচ বছর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। ” পরিষদের নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়েছে- “পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। ” আইনে উল্লেখ রয়েছে- “দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবধি কোন কারণে নির্ধারিত ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত, যা আগে ঘটবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে। ”
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মোট ছয় ধাপে ৪ হাজার ২৭৯ ইউনিয়নে ভোট আয়োজন করে কমিশন। প্রথম ধাপে ৭৫২ ইউপির ভোট হয় ২২ মার্চ। এর পর ৩১ মার্চ ৭১০টি ইউপি, ২৩ এপ্রিল ৭১১টি ইউপি, ৭ মে ৭২৮টি ইউপি, ২৮ মে ৭১৪টি ইউপি এবং ৪ জুন ৬৬০টি ইউপিতে ভোট হয়। তবে এবার ইউপি সংখ্যাও কিছু বেড়েছে। ইসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। তবে ২০০ ইউপিতে মামলা জটিলতার কারণে নির্বাচন আটকে আছে। এ ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ও কিছু ইউপিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ায় ৪ হাজার ১০০ ইউপিতে ধাপে ধাপে করতে হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষনা শুরু হবে। নির্বাচন চলবে বছর জুড়েই। তবে আগামী অক্টোবরে প্রায় দুই শতাধিক ইউপিতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতবারের মতো আসন্ন ইউপির ভোটও হবে দলীয় প্রতীকে। চেয়ারম্যান বা মেম্বার প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক নয়।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, নভেম্বর থেকে যেসব নির্বাচনের সময় হবে তা করা হবে। তিনি বলেন, অক্টোবর থেকে স্থগিত নির্বাচন শুরু হবে। আর নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে যখন যে নির্বাচন আসবে তা যথাসময়ে করা হবে।
পাঁচ ইউপিতে ভোট ২০ অক্টোবর : নির্বাচন কমিশন স্থগিত পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। পাঁচ ইউপি হলো- রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করিণী, হরিদেবপুর, চন্দনপাট। ভোলার লালমোহন উপজেলার ফরাশগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হবে আগামী ২০ অক্টোবর। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ ভোট গ্রহণ চলবে। ইসির উপ-সচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে গতকাল এ তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী, এসব ইউপিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর, যাচাই-বাছাই ২৬ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩ অক্টোবর। আর প্রতীক বরাদ্দ ৪ অক্টোবর।